রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:২৩ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক : বরিশাল বিভাগের ৬ জেলার ৪২ উপজেলা নিয়ে ২১টি সংসদীয় আসন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রেখে ১৬টি আসনে সরাসরি নৌকার প্রার্থী আছেন। অপর ৫টি আসনে আওয়ামী লীগের নেতাসহ বিভিন্ন জন স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে, ওয়াকার্স পার্টি, জাতীয় পার্টির (মঞ্জু) প্রার্থী রয়েছেন। এছাড়া এই জেলার আসনগুলোতে জাসদ, তরিকত ফেডারেশন, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ, বাংলাদেশের কংগ্রেস, এনপিপি, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি, বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট, তৃণমূল বিএনপির প্রার্থীরা নির্বাচন করছেন। বেশিরভাগ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের ঈগল মার্কার সঙ্গে নৌকার তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতার সম্ভাবনা রয়েছে। এসব স্বতন্ত্র প্রার্থীদের সবাই আওয়ামী লীগের নেতা, যারা দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে দাঁড়িয়েছেন। স্বতন্ত্রের দাপটের কারণে আওয়ামী লীগের শরিকরাও এখন দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। ফলে নৌকার সঙ্গে আওয়ামী লীগেরই স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মধ্যে মূল লড়াই হবে এটা নিশ্চিত করেই বলা যায়।
তবে বিভাগের প্রায় সব আসনেই প্রার্থীদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ ভোটারদের ভোট কেন্দ্রে উপস্থিত করা। কেননা প্রধান বিরোধী দল বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেনি। এছাড়া জাতীয় পার্টি নির্বাচন অংশগ্রহণ করলেও গাছাড়া ভাব। অন্যদিকে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন বঞ্চিতরা নির্বাচনী প্রচার প্রচারণায় নামলেও ভোটের মাঠে থাকবেন কিনা তা নিয়ে সন্দিহান খোদ আওয়ামীলীগের প্রার্থীরা। ইতোমধ্যেই আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে কেউ নৌকার পক্ষে, কেউবা আবার স্বতন্ত্র ঈগল প্রার্থীর পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। ফলে নির্বাচন যতো ঘনিয়ে আসছে পক্ষে বিপক্ষে অভিযোগ, হামলা-পাল্টা হামলার ঘটনাও ঘটছে।
এদিকে নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করার পাশাপাশি নির্বাচনী আচরণবিধি পরিপালনে এরই মধ্যে বিভাগের সব জেলায় বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটগণও নিয়মিত মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করছেন। এছাড়া নির্বাচনী দায়িত্ব পালনে বুধবার মাঠে নেমেছে সেনাবাহিনীর সদস্যরা। পাশাপাশি পুলিশ-র্যাব-আনসার সদস্যরা প্রচার প্রচারণার প্রথম দিন থেকেই মাঠে রয়েছে। অন্যদিকে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে ৭ জানুয়ারী অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় নির্বাচনের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে।
বরিশাল বিভাগের ২১টি সংসদীয় আসনে সরেজমিন পর্যালোচনা করে যা দেখা গেছে:
বরিশাল-১ আসনে নৌকা প্রতীকের হেভিওয়েট প্রার্থী আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ। তার প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় পার্টি মনোনীত লাঙ্গল প্রতীকের সেরনিয়াবাত সেকেন্দার আলী ও ন্যাশনালস পিপলস পার্টি মনোনীত আম প্রতীকের মো. তুহিন। তবে তাদের নির্বাচনী প্রচার প্রচারণা নেই বললেই চলে। ফলে এ আসনটিতে নৌকা প্রার্থীর জয় একেবারেই নিশ্চিত।
বরিশাল-২ আসনে নৌকার প্রার্থী হয়েছেন আওয়ামী লীগের শরিক ওয়াকার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন। এই আসনে তাকে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখে পড়তে হবে বলে আভাস পাওয়া গেছে। এখানে মেননের প্রধান প্রতিপক্ষ হবে আওয়ামী লীগ নেতা শের-ই-বাংলার নাতি, সাবেক পাট প্রতিমন্ত্রী একে ফয়জুল হকের ছেলে এ.কে ফাইয়াজুল হক রাজু। তিনি ঈগল প্রতীক নিয়ে ভোটের মাঠে শক্ত অবস্থানে রয়েছেন। স্থানীয় আওয়ামী লীগের একটি শক্তিশালী অংশ ঈগলকে সমর্থন জানিয়ে যাচ্ছে। ব্যাপক প্রতিদ্বন্দ্বিত হবে ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে। ফলে এ আসনটিতে কে হাসবেন হে হাসি তা জানতে অপেক্ষা করতে হবে ৭ জানুয়ারি পর্যন্ত।
বরিশাল-৩ আসনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী না দিলেও এই আসনে ত্রিমুখী লড়াই হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এখানে প্রথমে আওয়ামীলীগের প্রার্থী দিলেও আসন ভাগাভাগির কারণে শেষ মুহুর্তে আসনটি আওয়ামী লীগের শরিক জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দেয়। আর এ কারণে আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা বিভক্ত হয়ে যে যার মতো নির্বাচন করছেন। ফলে জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকে গোলাম কিবরিয়া টিপু, ওয়ার্কার্স পার্টির হাতুড়ি প্রতীকে টিপু সুলতান ও স্বতন্ত্র ট্রাক প্রতীক নিয়ে সাবেক যুবমৈত্রী নেতা আতিকুর রহমানের মধ্যে ভোটের লড়াই হতে পারে।
বরিশাল-৪ আসনে শক্ত কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় স্বতন্ত্র প্রার্থী পঙ্কজ দেবনাথের জয় অনেকটাই নিশ্চিত। এই আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী শাম্মী আহমেদের প্রার্থিতা ফিরে পেতে দায়ের করা আপিল আবেদন খারিজ করে দেন আদালত। ফলে শাম্মী আহমেদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না।
বরিশাল-৫ আসনে নৌকা প্রতীকে নির্বাচনের মাঠে রয়েছেন পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক। তার শক্ত প্রতিপক্ষ স্বতন্ত্র প্রার্থী সালাউদ্দিন রিপন ট্রাক-প্রতিক নিয়ে নির্বাচন করছেন। বরিশাল সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহর মনোনয়নের আবেদন গত মঙ্গলবার আপিল বিভাগে বাতিল হয়ে যাওয়ায় ফুরফুরে মেজাজে আছেন জাহিদ ফারুক। এখানেও নৌকার জয় অনেকটা সুনিশ্চিত।
বরিশাল-৬ আসনে নৌকার প্রার্থী কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল হাফিজ মল্লিক। সাবেক এই সেনা কর্মকর্তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান শামসুল আলম চুন্নু। এছাড়া এই আসনে আরো ৭জন প্রার্থী রয়েছেন। তবে নৌকাকে সবচেয়ে বেশি ভোগাবে আওয়ামী লীগ নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী শামসুল আলম। সাধারণ ভোটারদের মতে, সুষ্ঠু নির্বাচন হলে স্বতন্ত্র প্রার্থী শামসুল আলম চুন্নু বিজয়ী হবেন।
ঝালকাঠি:
ঝালকাঠিতে নৌকার বিজয় এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। ঝালকাঠি ১ আসনে সদ্য বিএনপি থেকে আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশ নিয়েছের ব্যারিস্টার শাজাহান ওমর। প্রথম দিকে আওয়ামীলীগের একটি বড় অংশ স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপকমিটির সদস্য এম মনিরুজ্জামান মনিরের পক্ষে অবস্থান নেয় এবং মনিরকেই শাহজাহান ওমরের বিজয়ে বড় বাধা বলে চাউর হয়। কিন্তু সংবাদ সম্মেলন করে তিনি নির্বাচন থেকে সরে দাড়িয়েছেন। বর্তমানে শাহজাহান ওমরের বিপক্ষে শক্ত কোন প্রতিদ্বন্দ্বি নেই। এদিকে ঝালকাঠি-২ আসনে আওয়ামী লীগ উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য প্রভাবশালী নেতা আমির হোসেন আমুর বিপরীতে শক্ত কোন প্রতিদ্বন্দ্বি নেই। যারা আছেন তাদেরকে ভোটাররাও চেনে না। ফলে ঝালকাঠির দুটি আসনেই নৌকার জয় একেবারেই নিশ্চিত।
পিরোজপুর:
পিরোজপুর জেলার ৩টি সংসদীয় আসনেও নৌকার বিপরীতে শক্ত অবস্থান নিয়েছে ঈগল। প্রতিটি আসনেই ঈগল শক্ত প্রতিরোধ গড়ে তুলবে বলে স্থানীয় ভোটাররা মনে করছেন। পিরোজপুর-১ আসনে বর্তমান মন্ত্রী আওয়ামী লীগের রেজাউল করিম, পিরোজপুর-২ আসনটিতে জেপির (মঞ্জু) আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর মত হেভিওয়েট প্রার্থীরাও ঈগলের দাপটে অস্থির হয়ে পড়েছেন। পিরোজপুর-১ এ মন্ত্রী শ.ম, রেজাউল করিমের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন পিরোজপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য এ. কে. এম আউয়াল। পিরোজপুরে আউয়ালের ব্যাপক প্রভাব রয়েছে। রয়েছে বিশাল ভোটব্যাঙ্ক। দলীয় মনোনয়ন না পেলেও তিনি নির্বাচনে জয়লাভের জন্য মোটেই ছেড়ে কথা বলবেন না। পিরোজপুর-২ আসনটি জাতীয় পার্টিকে (মঞ্জু) আওয়ামী লীগ ছেড়ে দিলেও তার বিপক্ষে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বি জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও পিরোজপুর জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন মহারাজ ঈগল প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। এ কারণে এই আসনটিতে হাড্ডি লড়াইয়ের সম্ভাবনা রয়েছে বলে স্থানীয় নেতাকর্মীরা মনে করছেন। অন্যদিকে পিরোজপুর-৩ আসনে নৌকা প্রতীকের কোন প্রার্থী না দেয়া এবং শক্ত কোন প্রার্থী না থাকায় স্বতন্ত্র ঈগল প্রতীকের প্রার্থী ডাক্তার রুস্তম আলী ফরাজীর জয় অনেকটাই নিশ্চিত।
পটুয়াখালী:
পটুয়াখালী জেলার ৪টি আসনে নৌকা ভালো অবস্থায় রয়েছে। এই জেলার ৪টি আসনের মধ্যে পটুয়াখালী-১ আসনটি ছেড়ে দেয়া হয়েছে আওয়ামী লীগের শরিক দল জাতীয় পার্টির প্রার্থীকে। এখানে জাতীয় পার্টির সাবেক মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদারের জয় লাভের সম্ভাবনা ৯০ ভাগ নিশ্চিত। পটুয়াখালী-২ আসনে সাতবারের সংসদ সদস্য ও নৌকার প্রার্থী আ.স.ম ফিরোজের বিজয় এবারও কেউ ঠেকাতে পারবে না বলে মনে করছেন স্থানীয় ভোটাররা। পটুয়াখালী-৩ আসনে নৌকার বিপরীতে বড় বাঁধা হয়ে দাঁড়াতে পারবে না ঈগল। বর্তমান সাংসদ এস এম শাহজাদা দলীয় মনোনয়ন পেয়ে নৌকা প্রতীক নিয়ে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এ আসনে নৌকার বিপরীতে শক্ত কোন প্রতিদ্বন্দ্বি নেই। তবে পটুয়াখালীর-৪ আসনে দুই হেভিয়েট প্রার্থী বর্তমান সাংসদ মহিবুর রহমান মুহিব ও সাবেক পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী মাহবুবুর রহমান তালুকদারের দিকে সবার নজর। এখানে নৌকার সঙ্গে ঈগলের প্রতিদ্বন্দ্বিতা হলেও শেষ হাসির সম্ভাবনা রয়েছে নৌকার।
ভোলা:
ভোলার ৪ টি আসনে নৌকার প্রার্থীরা নির্ভাবনায় আছেন। এই জেলার পুরো নির্বাচনী মাঠ আওয়ামী লীগের নৌকা প্রার্থীদের দখলে। জাতীয় নেতা তোফায়েল আহমেদের মতো হেভিওয়েট প্রার্থীও রয়েছে। তিনি ভোলা -১ আসন থেকে নির্বাচন করছেন। ভোলা-২ সংসদীয় আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য আলী আজম মুকুল নৌকা প্রতীক নিয়ে টানা তৃতীয়বারের মতো নির্বাচন করছেন। ভোলা-৩ আসনে টানা চতুর্থবারের মতো নৌকার প্রার্থী হয়েছেন বর্তমান সংসদ ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা নুরুননবী চৌধুরী শাওন। ভোলা-৪ সংসদীয় আসনেও টানা চতুর্থবারের মতো নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন বর্তমান সংসদ সদস্য আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব।
এইসব আসনে নৌকার বিপরীতে যারা প্রার্থী হয়েছেন তারাও এলাকায় অপরিচিত। তাদের কারোরই কর্মী সমর্থক খুঁজে পাওয়া যায়নি। নৌকার বিপরীতে শক্ত কোন প্রার্থী নেই। নৌকার জয় নিশ্চিত। তবে ভোট কেন্দ্রে ভোটারদের উপস্থিতি নিয়ে চিন্তিত প্রার্থীরা।
বরগুনা:
বরগুনা জেলার দুটি আসনের মধ্যে এবার বরগুনা-১ আসনে পাঁচ বারের সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগের নৌকার প্রার্থী ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুকে নির্বাচনী বৈতরণী পার হতে বেশ কাঠখর পোড়াতে হবে। কারণ তার বিপরীতে জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গোলাম সরোয়ার টুকু ঈগল প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছে। এছাড়াও শম্ভুর প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে ট্রাক প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মো. খলিলুর রহমান এবং কাঁচি প্রতীকে আমতলী উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি গোলাম সরোয়ার ফোরকান। এবার এই আসনে চারজনই হেভিওয়েট প্রার্থী। এই চার প্রার্থীর তিনজন বরগুনা সদরের বাসিন্দা।
অপরদিকে বরগুনা-২ সংসদীয় আসনে নৌকা নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন সাবেক সংসদ সদস্যের স্ত্রী সুলতানা নাদিরা। তিনি ছাড়া অন্য প্রার্থীরা এলাকায় অপরিচিত। নাদিয়ার বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার মত সক্ষমতাও অন্য প্রার্থীদের নেই। এই আসনে সুলতানা নাদিরার বিজয় সুনিশ্চিত।
বরিশালে বিএনপি-পুলিশ সংঘর্ষে আহত ১০, সাবেক এমপিসহ আটক ৭
এম.কে. রানা, বরিশাল ॥
বরিশালে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট বর্জনসহ অসহযোগ আন্দোলনের লিফলেট বিতরণের সময় পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের বাক বিতন্ডা ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। বুধবার বেলা ১১টায় নগরীর সদর রোডস্থ অশ্বিনী কুমার হল চত্ত্বরে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক এমপি আবুল হোসেন খানসহ বিএনপির ৭ নেতাকে আটক করেছে পুলিশ। আটক অন্যান্য নেতারা হলেন- আমিনুর রহমান টুটু, আল আমিন, হৃদয় হোসেন তামিম, রিয়াজ হোসেন, সুজন আকন ও সাইফুল ইসলাম।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, ভোট বর্জনের আহ্বান জানিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীরা সকাল ১০টায় আদালতপাড়ায় লিফলেট বিতরণ কর্মসূচি শুরু করেন। তারা পুলিশি বাধা উপেক্ষা করে আদালতপাড়া থেকে মূল সড়কে নেমে পড়েন। সেখান থেকে স্লোগান দিয়ে নেতাকর্মীরা প্রায় এক কিলোমিটার দূরে সদর রোড দলীয় কার্যালয়ে পৌঁছান। কার্যালয়ের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আকন কুদ্দুসুর রহমান, সদস্য আবু নাসের রহমত উল্লাহ, দক্ষিণ জেলা আহ্বায়ক আবুল হোসেন খান, সদস্য সচিব আবুল কালাম শাহীনসহ অন্যরা। সমাবেশ শেষে বিএনপি নেতাকর্মীরা আবারও মিছিল নিয়ে সড়কে ওঠার চেষ্টা করেন। এ সময় পুলিশের তাদের ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে পুলিশ লাঠিচার্জ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এ সময় আকন কুদ্দুস, আবু নাসের রহমত উল্লাহ, যুবদলের হাফিজ আহমেদ বাবলু, মাসুদ হাসান মামুনসহ ১০ জন আহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে বিএনপি।
দক্ষিণ জেলা বিএনপি নেতারা বলছেন, দলীয় কর্মসূচি পালনে কার্যালয় থেকে নেতাকর্মীর জড়ো হয়ে লিফলেট বিতরণে বের হন। কার্যালয় এলাকা থেকে বের হওয়ার চেষ্টার সময় পুলিশ এসে আমাদের নেতাকর্মীদের লাঠিচার্জ করে আহত করে। ধাওয়া দিয়ে কর্মসূচি পন্ড করে দেয়। আমাদের অন্তত ১০ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার মো. আলী আশরাফ ভূঞা জানান, পূর্বানুমতি না নিয়ে সড়কে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে কর্মসূচির পালনের উদ্যোগ নেওয়ায় বিএনপি নেতাদের বুঝিয়ে সরিয়ে দিতে চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু তারা না মেনে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে। পরবর্তীতে জনগণের জানমালের নিরাপত্তার স্বার্থে সড়ক থেকে তাদের সরিয়ে দেওয়া হয়।
ঘটনাস্থল থেকে ৭ জনকে আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করে মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মো. ফজলুল করিম জানিয়েছেন, তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
Leave a Reply